উইলিয়াম, হ্যারি ও রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য রাজা চার্লসের ক্যানসার কী পরিবর্তন নিয়ে আসবে?

উইলিয়াম, হ্যারি

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। রাজপরিবারের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি দুশ্চিন্তার সংবাদ। এক্ষেত্রে প্রিন্স উইলিয়াম, প্রিন্স হ্যারি এবং রাজপরিবারের অন্যান্যদের সম্পর্কগুলোও ফের সামনে চলে এসেছে এবং ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। খবর বিবিসির।

রাজা তার ক্যান্সার শনাক্তের খবর দুই ছেলেকে নিজে জানিয়েছেন। বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

আর এমতাবস্থায় ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি খুব শীঘ্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একাই যুক্তরাজ্যে যাবেন। ২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে আমেরিকান স্ত্রী মেগান মার্কেল ও দুই সন্তানকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়াতেই বসবাস করছেন হ্যারি।

এর আগে স্বাভাবিকভাবেই রাজার ৭৫ বছরের জন্মদিনে বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি। কিন্তু ট্যাবলডের সংবাদপত্রগুলো প্রায়শই তাদের নিয়ে নামে বেনামে বিতর্কিত সংবাদ পরিবেশন করে থাকে।

এদিকে প্রিন্স উইলিয়ামের ইতোমধ্যেই স্ত্রী ক্যাথরিনের অপারেশন শেষে দাপ্তরিক কাজে ফেরার কথা ছিল। এক্ষেত্রে এখন তার পাবলিক ইভেন্টে উপস্থিতি এবং সরকারি দায়িত্ব আর বেশি পরিমাণে পালন করতে হবে। একইসাথে অসুস্থ স্ত্রী এবং বাবাকেও সময় দিতে হবে।

রাজপরিবারে প্রিন্স উইলিয়াম উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রথমে আছেন। সেক্ষেত্রে রাজা চার্লস যেমন দীর্ঘ সময় মাকে রাজকীয় কাজে সাহায্য করেছেন, উইলিয়ামকেও এখন একই দায়িত্ব পালন করতে হবে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে তাকে জনসমক্ষে দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সকলের মনোযোগ হয়ত তার দিকেই থাকবে।

তবে এই সময়টাতে প্রিন্স উইলিয়াম নিজের স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকবেন। এর আগে ক্যাথরিন রাজপরিবারে সংকটময় পরিস্থিতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেই এখন অসুস্থতার জন্য কয়েক মাস স্বাভাবিক জীবনযাপনের বাইরে থাকবেন।

এদিকে রানি ক্যামিলা ২০ বছর আগেও রাজপরিবারের অংশ ছিলেন না। সেক্ষেত্রে এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে তিনি কতটুকু কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবেন সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।

তবে এক্ষেত্রে রানি ক্যামিলাকেই মুখ্য ভূমিকাই পালন করতে দেখা যাবে। গত সপ্তাহেও তিনি রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্য একাই বেশ কয়েকটি ইভেন্টে উপস্থিত ছিলেন।

বহুদিন ধরে ব্রিটিশ রাজপরিবারে নানা নাটকীয়তা চলছে। এক্ষেত্রে প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স এন্ড্রু নিজে রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এখন প্রিন্সেস অব ওয়েলসও অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

কর্মরত রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু প্রিন্স ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলসের বয়স ৫০ বছরের কম। বাকিরা বেশিরভাগই বয়স্ক।

৭৫ বছর বয়সী চার্লসকে আপাতত পাবলিক ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি রাষ্ট্রীয় সব দায়িত্ব পালন করে যাবেন এবং রীতি অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।

কিন্তু এর আগে রাজাকে নানা পাবলিক ইভেন্টে বেশ উচ্ছ্বাসিত দেখা গিয়েছিল সেক্ষেত্রে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য তিনি হয়তো সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

বাকিংহাম প্যালেস জানায়, হাসপাতালে রেখে নয় বরং তাকে বহিরাগত রোগী হিসেবেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে গতকাল (সোমবার) রাতে তিনি লন্ডনে নিজ বাড়িতেই ছিলেন।

প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়, “রাজা তার চিকিৎসা নিয়ে পুরোপুরি আশাবাদী। তিনি যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণোদ্যমে ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন।”

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ সিংহাসনে আরোহণ করেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এখন তার ক্যান্সার কোন পর্যায়ে বা তার সুস্থ হতে কতদিন লাগতে পারে, সেসব বিষয়ে আর কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি বাকিংহাম প্যালেস।

অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স-এ রাজার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “রাজা দ্রুতই পরিপূর্ণভাবে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সমগ্র জাতি তার মঙ্গল কামনা করছে।”

শেয়ার করুন:-

সম্পর্কিত খবর